এম সাইফুল ইসলাম শাফলু ,
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার পাটচাষীরা এখনো সনাতন পদ্ধতিতেই পাট জাগ দিচ্ছেন। পুকুর, বিল ও ডোবায় কাঁদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেওয়ায় একদিকে যেমন পাটের গুণগত মান কমে যাচ্ছে তেমনি এর দূর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা পাটচাষীদের পাটচাষ, পাট জাগ বা পাট পঁচানোর আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করলেও মানতে নারাজ ওইসব কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিসে সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১৮৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়ায় পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কৃষি অফিস চাষীদের পাটজাগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শের পরও কোন চাষীই এ পরামর্শ মানছেন না। তাঁরা আগের মত সনাতন পদ্ধতিতে পাটজাগ দিচ্ছেন। এতে করে তাদের উৎপাদিত পাটের রঙ কালো ও গুণগত মান কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে পাটপঁচা পানির দূর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে মরে ভেসে ওঠছে ওই জলাশয়ের মাছ।
বেড়বাড়ী গ্রামের পাটচাষী পানু মিয়া জানান, স্থানীয় কৃষি অফিস পলিথিন, বালি ও বস্তাভর্তি ইট দিয়ে পাটজাগ দেওয়ার পরামর্শ দিলেও এ পদ্ধতি ব্যয়বহুল হওয়ায় কোন চাষীর পক্ষে এটি করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। একই অসুবিধার কথা জানালেন বেড়বাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও রতনপুর গ্রামের ইস্রাফিল মিয়া।
হামিদপুর গ্রামের পাটচাষী আলতাফ হোসেন জানান, যাদের দু’এক বিঘা জমিতে পাট রয়েছে তারা ইট বালি কিংবা পলিথিন ব্যবহার পদ্ধতিতে পাটজাগ করতে পারেন। কিন্তু যারা ২০ থেকে ৩০ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেন তাদের পক্ষে এ পদ্ধতিতে পাটজাগ করা কষ্টকর এবং ব্যয়বহুল। কৃষি অফিসের কাছে উন্নত পাট জাগ পদ্ধতির জন্য ইটবালি ও পলিথিন সরবরাহ করার দাবি জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, পাট চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা নানা অজুহাতে মানতে নারাজ। সনাতন পদ্ধতিতে পাটজাগ দেওয়ায় পাটের রঙ বিবর্ণ হয়ে যায় এতেকরে চাষীরা তাদের উৎপাদিত পাটের কাক্সিক্ষত মূল্য থেকে বঞ্চিত হন।