নিজস্ব প্রতিবেদক: গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল সখীপুরে চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক মো. আমিনুল ইসলাম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ ৪ আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে ১১টায় টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লালমনিরহাটের কালিগঞ্জের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী শরিফা আক্তার শিল্পী (৩৬), পিরোজপুর কাউখালী উপজেলার মৃত এনামুল হকের ছেলে বাহার হোসেন কাজল মোল্লা ওরফে হুমায়ুন কবির হেলাল (৫৭), টাঙ্গাইলের সখীপুরের ঘেঁচুয়া গ্রামের আব্দুর রহমান মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩৬) ও নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দত্তেরগাঁও ভিটিপাড়া গ্রামের মৃত ছালাম খানের ছেলে মোখলেছুর রহমান মুকুল (৫৪)।
অটোরিকশা চালক আমিনুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত চার আসামির বরাত দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার জানান, তারা চারজনই আন্তঃজেলা অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তাদের নেটওয়ার্ক দেশজুরে বিস্তৃত। তাদের অপর এক সদস্য এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গৃহবধূ শরিফা আক্তার শিল্পী অসুস্থতার ভান করে রোগী সেজে তারা বাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশা ভাড়া করে।পরে অটোরিকশা নিয়ে উপজেলার কালমেঘা নামকস্থানে পৌঁছে চালক আমিনুল ইসলামকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পাশের বেলতলী বনের ভেতর রেখে অটোরিকশা ছিনতাই করে নিয়ে যায় আসামিরা।
এছাড়া গ্রেফতারকৃত চারজনের নামে বিভিন্ন থানায় ৮-১০টি করে মামলা রয়েছে। তারা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ইতোপূর্বে জেল-খানায় তাদের মধ্যে আলাপ-পরিচয় এবং জেলখানার বাইরে পুনরায় একত্রিত হয়ে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। অন্যান্য জেলায় তাদের আরও সদস্য রয়েছে। শুধুমাত্র অটোরকিশাটি ছিনতাইয়ের জন্যই চালক আমিনুল ইসলামকে খুন করা হয়।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর বিধায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকষ টিম তদন্তে নামে। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইমস অ্যান্ড অপস) শরফুদ্দীনের নেতৃত্বাধীন টিম গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও জানান, প্রথমে শরিফা আক্তার শিল্পীকে গাজীপুরের কাশিমপুর ঢালাইসিটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অন্য তিন জনকে ভিন্ন-ভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের অপর সঙ্গী মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
গত ২৮ অক্টোবর টাঙ্গাইলের সখীপুরে উপজেলার কালমেঘা গ্রামরের সোরহাব মিয়ার বাড়ির উত্তরে সরকারি আকাশমনি বাগানের ভিতরে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীরা অটোরিকশা চালক আমিনুল ইসলামকে হত্যা করে তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে কাঠ বাগানের ভিতরে লাশ ফেলে রেখে তার অটোরিকশক, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ২৯ অক্টোবর সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১১।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।