নিজস্ব প্রতিনিধি:
সম্প্রতি জারি করা পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন (এফবিইউটিএ)। শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আখতারুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা একটি প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের দৃষ্টিগোচর হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়-সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, তারা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন ১ জুলাই-২০২৪ তারিখ ও তৎপরবর্তী সময়ে নুতন যোগদান করবেন, তাহাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করিল।
হঠাৎ এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে।
নেতারা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন মনে করে, এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আরও স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
তারা বলেন, এ প্রজ্ঞাপন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা দর্শনের প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শনের শামিল বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন মনে করে। শিক্ষকদের প্রতি এ বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। কেননা এর ফলে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসতে আগ্রহী হবেন না। এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দুরভিসন্ধি রয়েছে কি না সেটাও ভেবে দেখা দরকার। কেন না, নিকট অতীতে বিদ্যমান বেতন স্কেল থেকে অবনমনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মসূচি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।
শিক্ষক নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনায় বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সুরাহা হয়েছিল। যে মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় এসে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজও তার উন্নয়ন যাত্রায় বিপুল উৎসাহ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে শিক্ষকদের আন্দোলনের পথে ঠেলে দেওয়ার পুরনো কৌশল শুরু হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন অনতিবিলম্বে এ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অসন্তুষ্টি লাঘব করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।