ঘাটাইল প্রতিনিধিঃ ঘাটাইল উপজেলায় শীত মৌসুমের শুরুতেই পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রির হিড়িক পরেছে। উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে চলছে পিঠা বিক্রির হিড়িক। এ ব্যবসায় অনেকেই ভাল আয় করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানায়। এ ব্যবসায় তেমন বেশি পুঁজি লাগেনা। জ্বালানী হিসেবে লাকড়ি বা খড়ি, কিছু গুড়, নারকেল ও চাউলের গুড়া দিয়ে শুরু করা হয় এ ব্যবসা।
ঘাটাইল উপজেলার পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাট-বাজারগুলোতে শীত মৌসুমে জমজমাট ভাপা মিঠা ও চিতই পিঠার ব্যবসা শুরু হয়। ক্রেতাদের সংখ্যা চোখে পরার মত। এ ব্যবসা চলে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। ঘাটাইল বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার মোড়ে এ মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায়। পিঠা বিক্রি জমে উঠে সন্ধ্যার পর থেকে। সন্ধ্যায় পরে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় থাকে অনেক বেশি। সমাজের সব শ্রেণীর লোকেই পিঠা খেতে যায়। কেউ টুলে বসে কেউ বা দাঁড়িয়ে পিঠা খায়। আবার অনেকে বাড়ির জন্য কাগজে করে নিয়ে যায় এসব পিঠা।
অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী ভাপা পিঠা ছাড়াও চিতই বানিয়েও বিক্রি করে। আবার চিতই পিঠার সাথে ধনিয়া পাতা, মরিচ, সরষে, শুঁটকি বাটা দিয়েও পিঠা বিক্রি করে। এসব পিঠার এক একটির দাম নেয়া হয় ৫ থেকে ১০টাকা। পিঠা তৈরীর বেশির ভাগ দোকানের ব্যবসায়ী হয় মহিলা। পাশাপাশি পুরুষরাও তৈরি করে এ পিঠা। পিঠা বিক্রেতা এক ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছর শীত এলেই আমরা পিঠা বিক্রি শুরু করি। শীতের প্রকোপ যত বেশি থাকে পিঠা বিক্রিও তত বেড়ে যায়।
এক ব্যবসায়ী জানান,প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক থেকে দেড় হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি। যে পিঠায় গুড় ও নারকেল দেয়া হয় সেসব পিঠার ক্রেতাও বেশী। শীতের হিমেল হাওয়ার তীব্রতা যতই বেশী বাড়ছে পিঠার বিক্রি ততই বেড়ে যায়। পিঠা খেতে আসা মানুষ জানান, শীতের সময় ভাপা ও চিতই মিঠা পিঠা খাওয়ার মজাই অন্যরকম। গরম গরম ভাপা পিঠা দেখলে লোভ সামলানো দায়, তাইতো খেতেই হবে অন্তত একটি ভাপা পিঠা।
তারা আরো জানান, কর্মব্যস্ততার কারণে বাসায় পিঠা তৈরি করে খাওয়া অধিকাংশ সময়ই সম্ভব হয় না। ফলে রাস্তার পাশের দোকান থেকে কিনে খেতে হয়। তবে পিঠা যারা তৈরি করেন তারা যেন ধুলা বালি থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ সম্মতভাবে পিঠা তৈরি করেন। সাধারণত সিদ্ধ চাউলের গুঁড়া তৈরি করে সেই গুঁড়ার সাথে নারিকেল, খেজুর পাটালি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ভাপা পিঠা। প্রতিদিন অন্তত ৩ শ’ থেকে ৪ শ’ পিস পিঠা বিক্রি করেন একজন বিক্রেতা। প্রতিপিস পিঠা বিক্রি করা হয় ৫ টাকা করে, এতে লাভ দেড় টাকা। পিঠা বিক্রেতারা জানান, এখন বিক্রি বেশি থাকায় লাভের পরিমাণও একটু বেশি। স্বাস্থ্যসম্মতভাবেই পিঠা তৈরি করছেন বলে দাবি তাদের।
তবে এই বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলার স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুর রহমান খান জানান, রাস্তার পাশে খোলা বাজারে তৈরি পিঠাতে ধুলা-বালিসহ নানা রকম জীবাণু লেগে যেতে পারে। যা হতে পারে, ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ নানা ধরনের কঠিন শারীরিক সমস্যার কারণ। তাই পিঠা তৈরি ও তা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন - "নিউজ টাঙ্গাইল"র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।