এম সাইফুল ইসলাম শাফলু:
নাম দুলাল হোসেন বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে, পেশায় একজন অটো চালক। সহায় সম্বল বলতে ওই অটোই তার সব। চার সন্তান মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে ছয় জনের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। অটো চালিয়ে যা পান তা দিয়েই চলে তার সংসার । প্রতিদিনের মত ১৯ আগষ্ট সকালে অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন দুলাল হোসেন। সারাদিন পর রাতে তৈলধারা চৌরাস্তা থেকে তিনজন যাত্রী উঠে দুলাল হোসেনের গাড়িতে। দুলাল হোসেনের গাড়ি সখীপুর উপজেলার পলাশতলী এলাকায় পৌঁছালে ওই যাত্রিরা দুলাল হোসেনকে হাত পা বেঁধে বেধম প্রহার করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। সকালে পথচারীরা তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাত হিসেবে ভর্তি করেন। তার একমাত্র সম্ভল অটো গাড়ীটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন দুলাল। ২১ আগষ্ট তাকে হাসপাতালে দেখতে যান সখীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সবুর রেজা। দুলাল হোসেনের অবস্থা দেখে সবুর রেজা তার ফেসবুক পেইজে দুলাল হোসেনকে নিয়ে মানবিক আবেদনের একটি পোষ্ট দেন । আর তাতেই ভাগ্য ফেরে দুলাল হোসেনের। ওই ফেসবুক পোষ্টের পর তার পরিবারের লোকজন খোঁজ পায় দুলাল হোসেনের। জানা যায় তার বাড়ি উপজেলার আন্দি গ্রামে। বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ এগিয়ে আসেন দুলাল হোসেনকে সাহায্য করতে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ডা. আনোয়ার হোসেন , ডা. রেজাউল করিম, সোনালী ব্যাংক সখীপুর শাখার এক কর্মকর্তা এবং সবশেষে সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত সিকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখী। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সবুর রেজা সকলের একটু একটু সহযোগিতা একত্রিত করে সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া দুলাল হোসেনকে ৪৩ হাজার টাকায় একটি অটো ভ্যান কেনা হয়। সোমবার উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুলাল হোসেনের হাতে অটো ভ্যানটি তুলে দেওয়া হয়।
ভ্যানটি হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত দুলাল হোসেন বলেন, “আমার অটো ছিনতাই হওয়ার পর কোনদিন এক বেলা কোন দিন না খাইয়া দিন কাটাইছি” । এখন ভ্যান চালাইয়া ছেলে মেয়ে নিয়া দু’বেলা ভাত খাইয়া বাঁচবার পাড়–ম এবং কৃতজ্ঞতা জানান উপজেলা প্রশাসনের প্রতি।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সবুর রেজা বলেন, অসহায় মানুষদের প্রতি একান্ত দায়বদ্ধতা থেকেই চেষ্টা করেছি কিছু করার। যদিও একটি অটো ভ্যান অনেকেই কাছেই কিছুই না কিন্তু দুলালদের মত লোকদের কাছে এটাই অনেক কিছু, একটি পরিবারের অবলম্বন।