ভূঞাপুর প্রতিনিধিঃ
মানুষ বেঁচে থাকার জন্য কত রকমই না স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে মানুষ নিরলস ভাবে দিন রাত পরিশ্রম করে থাকে। নিজের প্রচেষ্টা ও মেধাভিত্তিক বুদ্ধিমাত্রা প্রয়োগে কেবমাত্র সেই স্বপ্নের গন্তব্য স্থাঁনে পৌঁছানো সম্ভব। এই স্বপ্ন দেখা নিয়ে কথা হয় টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মেরিনা আক্তার মিতুর সাথে। তার অফিসে চা খাওয়ার আড্ডায় নানাদিক আলোচনায় একপর্যায়ে মেরিনা আক্তার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরাই আমার স্বপ্ন, আমার ভবিষৎ। কেননা এই শিশুরাই আগামীদিনে দেশকে সুন্দর করে শিক্ষার আলোয় গড়ে তুলবে, দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করবে। আমি সেই লক্ষে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে। শিক্ষাক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা ধরণের উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি। যাতে করে শিশুরা অকালে শিক্ষার আলো থেকে ঝড়ে না যায়। আমি সর্বদা শিক্ষার্থীদের নিয়ে সময়টা ব্যায় করি। সকল শিক্ষকদের আন্তরিক ভালবাসায় পাঠ-পরিকল্পনা কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছি। কথা হয় তার কাজের সফলতা নিয়ে তখন মেরিনা আক্তার তার সফলতার কথা জানিয়ে বলেন, আমি মূলত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইবানী ক্লাস্টারের কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন লক্ষে নিজ প্রচেষ্টায় বিভিন্ন কাজ করছি। গত ক’দিন ইবানী ক্লাস্টার ২০১৬ বাস্তবায়নে পুরস্কার বিতরনী ও সেরা দাতা (SLIP) সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান করেছি। ক্লাস্টারের শিক্ষার মান-উন্নয়নে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্তরিক কর্ম প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের বিশেষ কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দৃঢ় তা ভাবে করেছি। এতে মোট ১৮ টি বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। যা বিগত ৮/৯ মাস ধরে নিবিড় ভাবে মনিটরিং করা হয় এবং এ কাজ গুলো সফল বাস্তবায়নে শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করতে তাদের পুরস্কৃত করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। প্রাথমিক সহকারি শিক্ষা অফিসার জানান, শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতা, সহকর্মীদের সহযোগিতা, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উৎসাহ আমাকে সাহস যুগিয়েছে। বিদ্যালয় আমাদের, সন্তান আমাদের, সকল দ্বায়-দায়িত্বও আমাদের এই মূল মন্ত্র ও স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হয় প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য (SLIP) ফান্ড গঠন করা। এতেও আমি ব্যাপকভাবে সাড়া পেয়েছি আমাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে, স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি (SMC) সভাপতিদের কাছ থেকেও। অপর দিকে টাঙ্গাইল জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন স্যার, ভূঞাপুর উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল এবং বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন স্যার অভাবনীয় ভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন। সর্বাধিক পরিমাণ এই পাঠ-পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে অনুদান দেয়। এতে উক্ত তিন জন সেরা দাতা নির্বাচিত হয়েছেন। সকল দাতাদের দেয়া হয় বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার।
মিতু বলেন, ১৮ টি ক্যাটাগরিতে যে সব বিদ্যালয় সবচেয়ে কাজ বাস্তবায়ন করেছে তার মধ্যে ৮ টি বিদ্যালয় ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করেছে। এ ছাড়াও আরো ১০ টি ক্যাটাগরিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ভাবে পুরস্কৃত করা হয়।যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মাঝে ব্যাপক উৎসাহের সঞ্চার করবে বলেও আশা করছি। শিশু-শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষণীয় ভাবে বিদ্যালয়কে উপস্থাপনের জন্য আমি বিদ্যালয়ের পরিবেশের উপর জোর দিয়েছি। শিক্ষাথীদের সৃজনশীল মেধা বিকাশের লক্ষ্যে রচনা প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল “আমার বিদ্যালয়, আমার স্বপ্ন” । নির্ধারিত কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ড্রেস তৈরী ও তার নিয়মিত ব্যবহারের জন্য সেরা তিনটি বিদ্যালয়কে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়।
মেরিনা আক্তার বলেন, ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরী ও ব্যবহার, সরকারিভাবে বিদেশ সফর, ভাল ফলাফল, উপকরণ প্রস্তুত, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি সহ অন্যান্য শ্রেনিকক্ষ সজ্জিতকরণে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সম্মানিত ডিপিইও টাঙ্গাইল, ইউএনও ভূঞাপুর, এডিপিইও মো. বায়োজিদ খান লিটন, ডিপিইও আতাউর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, ইউইও ম্যাম, ভূঞাপুর পৌর মেয়র মহদোয়ের দেয়া প্রসংশা আমার কর্মদক্ষতাকে আরো শক্তিশালী করবে। নিজ ক্লাস্টারের উন্নয়নের জন্য একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসাবে উপজেলা ইউএনও মহোদয়ের নিকট আর্থিক সহয়তা প্রাপ্তি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞতা। ইবানী ক্লাস্টারের সাংস্কৃতিক মঞ্চ সহ আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসের মাধ্যমে আমাদের পেশাগত উন্নয়নে সহায়ক তথা শিক্ষায় শিশু শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার প্রতিটি কর্মক্ষেত্র ভূমিকা রাখলেই আমি সার্থক হব। আমার এই আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আয়োজক মেরিন বলেন, আমি সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে সকলের প্রতি কতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে আগামী দিনে আরো বৃহত্তর পরিসরে ইবানী ক্লাস্টারের প্রতিটি কর্ম-পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তাদের প্রতিটি কাজে উৎসাহিত বাড়ানোর লক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের করতে আয়োজন করতে পারি সেজন্য সকলে প্রতি আন্তরিক সহযোগিতা দোয়া কামনা করছি।