এম সাইফুল ইসলাম শাফলুঃ টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে ভোটে পরাজিত তিন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করাসহ ইভিএম বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। ১৯ জুন রোববার দুপুরে সখীপুর প্রেসক্লাব অডিটরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা। তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা নৌকার প্রার্থীর কাছ থেকে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ইভিএমে কারসাজি করে ফলাফল পাল্টিয়ে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন, নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী (মোটরসাইকেল প্রতীক) মোহাম্মদ বাদল মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে অন্য দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুজ্জামান তালুকদার (চশমা) ও হাফিজ উদ্দিনসহ (ঘোড়া) চারটি ওয়ার্ডের পরাজিত সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী চারজন, দুইটি ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য পদপ্রার্থী দুইজন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত ১৫ জুন সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ও দাড়িয়াপুর দুটি ইউপিতে ইভিএমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে গজারিয়াতে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ও দাড়িয়াপুরে একই দলের আনসার আলী বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ বাদল মিয়া অভিযোগ করেন গত ৮ জুন আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ০১৯৪৩৬৮৪৯০৮ ও ০১৯৪৪৯২৩৩৪৬ বিকাশ নম্বর দুটিতে ৫০ হাজার টাকা করে পাঠান। এছাড়াও আরও চারটি নম্বরে একাধিকবার নির্বাচনের আগে একই ব্যক্তি আরও এক লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠান। এ টাকা পাঠানোর কারণে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাঁর ফল পাল্টিয়ে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী হিসাবে ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে এ সম্মেলনে অভিযোগ করা নম্বরগুলোতে একাধিকবার ফোন করা হলে ওই নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বেসরকারিভাবে বিজয়ী গজারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ওই তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী যেসব অভিযোগ এনেছেন তা হাস্যকর ও ভিত্তিহীন। ইভিএমে স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে সুষ্ঠুভোট হয়েছে। ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। তাঁরা বিএনপি-জামায়াতের লোক। ভোটে পরাজিত হয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন ও এ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে তাঁরা এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বেসরকারিভাবে বিজয়ী ওই চেয়ারম্যান আরও বলেন, ভোটের আগে একটি প্রতারক চক্র নির্বাচন কমিশনের পরিচয় দিয়ে বিকাশ নম্বরে টাকা চেয়ে আমার কাছেও ফোন করেছিল। কিন্তু আমি পরে জানতে পারি ওরা নির্বাচন কমিশনের লোক নয়। এরা প্রতারক চক্র। আমি সচেতন ও আইনজীবী হওয়ায় ওই চক্র আমার কাছ থেকে টাকা নিতে পারেনি। মনে হচ্ছে- ওদের পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকেই ওই প্রতারক চক্র টাকা নিয়েছে। এখন ভোটে পরাজিত ও প্রতারিত হয়ে আমার কথা বলছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গজারিয়া ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা আতাউল হক বলেন, আমার বা আমাদের কোনো কর্মকর্তা বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করেছেন-এমন কোনো প্রমাণ তাঁরা দেখাতে পারবে না। তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে যে সব অভিযোগ করেছেন তা খুবই অবাস্তব ও কাল্পনিক। ওই নম্বরগুলো নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কারও নয়। তাঁরা হয়তো প্রতারিত হয়েছে- এখন হেরে গিয়ে দোষ দিচ্ছেন আমাদের।